• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে মেঘনায় ভেসে গেছে নৌকা 

প্রকাশ:  ২৬ অক্টোবর ২০২২, ২১:৪৬
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় প্রায় পাঁচ ফুট জলোচ্ছ্বাস ও প্রচণ্ড বেগে বাতাস বয়ে গেছে। এতে জেলা শহরসহ মেঘনা উপকূলে গাছ উপড়ে পড়ে বহু বসতঘর ভেঙে গেছে। জলোচ্ছ্বাসে রাস্তা ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে কয়েকটি নৌকা।

কমলনগরের কাদিরপন্ডিতের হাট এলাকার শাহ আলমের নৌকাসহ পাঁচ জেলের নৌকা জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে বলে জানা গেছে। সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় নৌকাগুলো খুঁজেও পাননি তারা।

জোয়ারের পানিতে প্রায় আড়াই শতাধিক গরু ও কয়েকটি মহিষ ভেসে যাওয়ার খবরও পাওয়া গেছে। আমন ফসল ও শীতকালীন শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ৩৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল লক্ষ্মীপুর। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে ও প্রশাসন সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

রামগতি, কমলনগর ও সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে ঘুরে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট বাতাসের কারণ কয়েকশ ঘর ভেঙে গেছে। এরমধ্যে গাছ ভেঙে পড়ায় অধিকাংশ ঘর ভেঙে যায়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কমে গেলেও উপকূলে ৪-৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

কমলনগরের মতিরহাট বাজারের ওপর প্রায় চার ফুট পানি ছিলো। বাঁধের ওপর দিয়ে জলোচ্ছ্বাসের পানি বাজারে ঢুকে পড়ে। জলোচ্ছ্বাসে কমলনগরের বলিরপোল-নাসিরগঞ্জ সড়ক, নবীগঞ্জ-চৌধুরী বাজার সড়ক, তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়কসহ রামগতি-কমলনগরের শতাধিক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে সড়কগুলো।

লাহারকান্দি ইউনিয়নের কয়েকজন সবজি চাষি বলেন, তাদের প্রায় সাত একর জমির টমেটো ও পেঁপে গাছ ভেঙে গেছে। ঋণ নিয়ে তারা এ সবজি চাষ করেছিলেন।

চর কালকিনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছায়েফ উল্লাহ জানান, গাছপালা পড়ে ও বাতাসে দুই শতাধিক ঘরে ভেঙে গেছে। হাজারের বেশি গাছ বাতাসে উপড়ে পড়েছে।

লক্ষ্মীপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অভিযোগ কেন্দ্রে কর্মরত মো. সোহেল জানান, সদর উপজেলা জকসিন এলাকায় তাদের ৩৩ কেভি ভোল্টের সংযোগ তারের টাওয়ার হেলে পড়েছে। নোয়াখালী থেকে ৪৫ কিলোমিটার এলাকায় বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়ে তার ছিঁড়ে গেছে। রামগঞ্জ গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে লক্ষ্মীপুর শহরে সরবরাহ দেওয়া হয়েছে। পরে পুরো শহরে বিদ্যুৎ সচল করা হয়।

জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জাকির হোসেন জানান, পল্লী বিদ্যুতের ৩৬৫টি খুঁটি ভেঙে গেছে। ৪৫০টি স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে। এতে তাদের প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সবগুলো মেরামত করে পরে কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হয়েছে। এখনো কিছু এলাকা বাকি আছে।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, জোয়ারের পানিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় আড়াই শতাধিক গরু ও কয়েকটি মহিষ ভেসে গেছে। ঘূর্ণিঝড় শুরু হওয়ার আগে বিপুল সংখ্যক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. জাকির হোসেন বলেন, ঝড়ে আমন ফসল ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

লক্ষ্মীপুর,নৌকা,সিত্রাং,তাণ্ডব,মেঘনা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close